উচ্চ রক্তচাপ কমানোর উপায় কি জেনে নিন বিস্তারিত- Ajkeritweb

উচ্চ রক্তচাপ কমানোর উপায় কি? উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে ওষুধ। কিন্তু ওষুধ ছাড়াও কিছু নিয়ম মেনে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।  আমরা জানি উচ্চ রক্তচাপ একটি খুব সাধারণ সমস্যা কিন্তু কখনও কখনও এটি জীবন হারাতে পারে। অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত ওজন, মানসিক চাপ, ব্যায়ামের অভাব, ধূমপান ইত্যাদি উচ্চ রক্তচাপের কিছু কারণ।

হঠাৎ উচ্চ রক্তচাপ কমানোর উপায় কি

রক্তচাপ হল রক্ত প্রবাহের সময় শরীরের শিরাগুলিতে যে চাপ দেয় তাই রক্তচাপ। যখন এই পার্শ্বচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয় বা বেড়ে যায় তখন তাকে উচ্চ-রক্তচাপ বলে।

রক্তক্ষরণ চাপ হল রক্তনালীতে রক্তের দ্বারা প্রবাহিত চাপ। এটি মিলিমিটার মার্কিউরি (mmHg) এককের পরিমাপ করা হয় এবং দুটি সংখ্যায় প্রকাশিত হয়: সিস্টোলিক প্রেশার, এবং ডায়াস্টোলিক প্রেশার।

সিস্টোলিক চাপ হ’ল কার্ডিয়াক এবং সংবহন অবস্থার সময় রক্তনালীগুলির প্রসারণের সময় রক্তচাপ। ডায়াস্টোলিক চাপ হৃৎপিণ্ডের কাজ না করার সময় হৃদপিণ্ড বিশ্রামের সময় রক্তনালীতে চাপ হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য স্বাভাবিক রক্তচাপের পরিসীমা প্রায়ই প্রায় 120/80 mmHg বলে মনে করা হয়।যদি কারো রক্তচাপের মাত্রা 140/90 mmHg বা তার বেশি হয়, তাহলে তার জানা উচিত যে তার উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে।

কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি না—যদি রক্তচাপ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়, তাহলে তা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে সারাজীবন ওষুধ সেবন করতে হবে।

উচ্চ রক্তচাপের ফলে যে সমস্যা গুলো হয়:

রক্তচাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিমাপ কিন্তু যা মানুষের হৃদপিণ্ডের চাপ নিয়ন্ত্রণ করে। সুস্থ থাকার জন্য রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখা একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ অনেক সমস্যার কারণ হতে পারে, যেমন:

কিডনি সমস্যা: উচ্চ রক্তচাপের কারণে কিডনির সমস্যা হতে পারে।

স্ট্রোক: নিম্ন রক্তচাপের সাথে রক্তচাপ তুলনামূলকভাবে বেশি হলে স্ট্রোক হতে পারে।

হার্ট অ্যাটাক: উচ্চ রক্তচাপ বড় হৃদরোগের একটি উপসর্গ হতে পারে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

হার্ট ফেইলার: যদি রক্তচাপ শারীরিক স্বাস্থ্যের স্বাভাবিক সীমা ছাড়িয়ে যায়, তবে এটি হার্ট ফেইলিউরের উপস্থিতির ঝুঁকি হতে পারে।

খাদ্যাভ্যাস

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে জন্য খাদ্যাভ্যাস বিশেষ ভূমিকা রাখে। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে 8 থেকে 14 মিলিমিটার মার্কারি কমানো সম্ভব। অর্থাৎ কারো রক্তচাপ 130/90 mmHg হলে তা 120/80 mmHg-এ নেমে আসতে পারে।

সমস্যা হল, আমরা ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করি না। আমরা চর্বিযুক্ত খাবার, জাঙ্ক ফুড, রিচ ফুডে বেশি অভ্যস্ত। কিন্তু এসব খাবারের কারণে রক্তচাপ বেড়ে যায়। এ জন্য খাদ্যতালিকায় কিছু খাবার যোগ করতে হবে এবং কিছু খাবার বাদ দিতে হবে।

উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ঘরোয়া উপায়

যে খাবার গুলো খাওয়া যাবেনা:

উচ্চ রক্তচাপের সময় কিছু খাবার খাওয়া উচিত নয় কারণ এগুলো রক্তচাপ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। নিম্নলিখিত খাবারগুলি খাওয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত:

লবণ: লবণ খাওয়া সীমিত করুন এবং বেশি লবণযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। লবণ আর্থিক চাপ বাড়াতে পারে এবং হার্টের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে।

মিষ্টি: অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় জিনিস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ চিনি বা মিষ্টি বেশি খেলে রক্তচাপ বাড়াতে পারে। তাই মিষ্টির জাতীয় জিনিস কম খাওয়াই ভালো।

প্রক্রিয়াজাত খাবার: প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন প্রিজারভেটিভ, লবণ, চিনি, চিপস ইত্যাদি উচ্চ রক্তচাপের প্রভাব বাড়াতে পারে। এই পণ্যগুলির সীমিত খাওয়াই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

উচ্চ রক্তচাপ কমানোর খাবার

রক্তচাপ কমাতে কিছু খাদ্য নিয়মিত খাওয়া উচিত। কারণ এতে আপনার উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করবে। এই খাবার গুলো বেশি খাওয়া উচিত যেমন:

পুষ্টিকর খাবার: শাকসবজি, ফল, প্রোটিন আপনার খাবারে সহজেই পাওয়া যায়। স্বাস্থ্যকর পুষ্টিকর খাবারের উদাহরণ হল সবজি, ফল, গোটা শস্য, ডাল, মাংস, মাছ, দুগ্ধজাত দ্রব্য (যেমন দুধ, দই)। এই খাবারগুলির একটি স্বাস্থ্যকর পুষ্টিকর খাবার, এই খাবারগুলি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার: আপনার প্রোটিনের মাত্রা উন্নত করতে আপনি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের উদাহরণ হল মাংস, মাছ, ডাল, সয়াবিন, মিঠা পানির মাছ এবং শেলফিশ। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার সাধারণত সহজলভ্য এবং মানসম্পন্ন পুষ্টি প্রদান করে এবং আপনার স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

এই খাবারগুলো আপনারা প্রতিদিন খাওয়ার চেষ্টা করবেন কারণ এই খাবারগুলো খেলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায় না। এবং উচ্চ রক্তচাপ থাকলে তখন এই খাবার গুলো বেশি বেশি খাবেন, এতে করে আপনার রক্তচাপ কমাতে এই খাবারগুলো সাহায্য করবে।

উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ঘরোয়া উপায়

উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ব্যায়াম

রক্তচাপ কমাতে ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন পদ্ধতি নিয়মিতভাবে অনুসরণ করা উচিত। ব্যায়াম করার মাধ্যমে আপনি আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের সুযোগ পাবেন। প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটা আপনার জন্য খুবই উপকারী হতে পারে। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার চেষ্টা করুন। এটি আপনার কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমকে শক্তিশালী করে এবং রক্তচাপ কমাতেও সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সোনিক ব্যায়াম, হাইড্রোসাইকেল, ট্রেডমিল বা স্থির বাইক, স্কোয়াট, ট্রেডমিলের মতো ব্যায়ামগুলি করলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে। 

ব্যায়াম বা কায়িক শ্রম করে বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অতিরিক্ত ওজন হারানোর ফলে সিস্টোলিক রক্তচাপ 5 থেকে 20 mmHg এবং ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ 10 mmHg কমাতে পারে। শুধু তাই নয়, শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম অন্যান্য রোগেও বেশ উপকারী।

উচ্চ রক্তচাপ কমানোর উপায় কি আসলে উচ্চ রক্তচাপ কমানোর জন্য তিন মাস নিয়মিত এই বিষয়গুলো ফলো করুন। এবং প্রাথমিকভাবে তিন মাসের মধ্যে যদি আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না আসে তখন আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। জীবন ধারণ পরিবর্তন করতে হলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে।

About The Author

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 + 18 =

Scroll to Top
MENU
AjkeritWeb